খানাখন্দ আর গর্তে ভরা নওগাঁ-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়ক ॥ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল ॥ ভোগান্তিতে পথচারী

খানাখন্দ আর গর্তে ভরা নওগাঁ-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়ক ॥ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল ॥ ভোগান্তিতে পথচারী

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ

নওগাঁ-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়কটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কারের অভাবে বেহাল অবস্থা। পিচ উঠে সড়কটির অসংখ্য স্থানে ভাঙাচোরা, খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বালু, ইট, পাথর ও পণ্যবাহী ভারী ট্রাক চলাচল করায় সড়কটির অধিকাংশ স্থানই দেবে গেছে।

এতে করে ছোট-বড় ধরণের দুর্ঘটনার পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে হাজার হাজার পথচারী।


একাধিক জেলা ও কয়েকটি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের চলাচলের জন্য একমাত্র এই আঞ্চলিক মহাসড়কটি দ্রুত আধুনিকমানের সড়কের মানে নতুন করে সংস্কার করার দাবী বৃহত্তর নওগাঁবাসীর। তবেই এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকা আরো সচল হবে। বদলে যাবে এই অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান। 


সূত্রে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতায় নওগাঁ থেকে বদলগাছী উপজেলা সদর পর্যন্ত এই আঞ্চলিক মহাসড়কটির দৈর্ঘ্য ২০কিলোমিটার।

২০কিলোমিটারের পুরো সড়ক জুড়েই অসংখ্য খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। রাস্তাটির বেশ কিছু স্থানে দেবে এবং পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে পড়ে ভারী পণ্যবাহী ট্রাক প্রায়ই আটকে যাচ্ছে। কোথাও কোথাও রাস্তায় বড় বড় ঢিবি তৈরি হয়েছে।

সড়কের পাহাড়পুর বাজার, কীর্ত্তিপুর বাজার, বালুভরা, খলসী মোড়, চাংলা, বদলগাছী খাদ্যগুদাম মোড়, হাসপাতাল মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে সড়কটির অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ।  খানাখন্দে ভরা সড়কটিতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

নষ্ট হচ্ছে যানবাহন আর দীর্ঘ হচ্ছে ভোগান্তি। সর্বশেষ ২০১৫সালে সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্তকরণ কাজ করা হয়। এরপর সড়কটিতে আর কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। 


নওগাঁ থেকে এই সড়ক দিয়েই জায়পুরহাট, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুর জেলাসহ দেশের অন্যান্য জেলা এবং নওগাঁ জেলার পত্নীতলা, সাপাহার, মহাদেবপুর ও ধামইরহাট উপজেলাবাসীর চলাচলের একমাত্র প্রধান সড়ক এটি।

এছাড়াও ঐতিহাসিক পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহার (সোমপুর বিহার) যাবার এটিই একমাত্র প্রধান সড়ক। রাস্তাটি ২২টনের বেশি যান চলাচলের উপযোগী নয়, কিন্তু এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ৩০থেকে ৪০টন ওজনের পণ্যবাহী যানবাহনও চলাচল করে।

প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে ছোট-বড়সহ ৫থেকে ৭হাজার যানবাহন চলাচল করে। রাস্তার বদলগাছী টিএন্ডটি সংলগ্ন স্থানের অবস্থা খুবই খারাপ ও গর্তের সৃষ্টি হওয়ার কারণে গর্তে চাঁকা দেবে আটকা পড়ছে বড় বড় ট্রাক। যার কারণে অধিকাংশ সময়ই রাস্তার দুই পাশে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের।


উপজেলার বাসিন্দা ও অটোরিকশা চালক সবুজ বলেন, পাঁচ বছর আগেই সড়কটি সংস্কার ও প্রশস্ত করা হয়। এরপর মাঝে মাঝে গর্ত ভরাট কাজ ছাড়া সড়কটিতে তেমন কোনো উন্নয়ন কাজ হয়নি। ফলে সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

খানাখন্দের কারণে প্রায়ই অটোরিকশার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। 


বাস চালক শফিকুল ইসলাম বলেন, সারা রাস্তায় গর্ত আর ভাঙাচোরা। রাস্তার এই অবস্থার কারণে আগে যেখানে নওগাঁ থেকে বদলগাছী যেতে সর্বোচ্চ ২০মিনিট সময় লাগতো এখন সেখানে ৫০ থেকে ৬০মিনিট সময় লাগছে। খানাখন্দের কারণে গাড়ি প্রচুর ঝাঁকুনি খায়।

গাড়ির ঝাঁকুনিতে যাত্রীদের শরীর বিষের মতো ব্যথা হওয়াসহ গাড়ীর যন্ত্রানাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা এই মরন ফাঁদ সড়ক থেকে মুক্তি চাই। 


নওগাঁ সড়ক ও জনপদ বিভাগের  নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সাজেদুর রহমান সাজিদ জানান, আঞ্চলিক মহাসড়ক হিসেবে কখনোই এই সড়কটিতে কাজ করা হয়নি। আমরা এই সড়কসহ জেলার আরো কয়েকটি আঞ্চলিক মহাসড়কের দীর্ঘ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বরাবর পাঠিয়েছি।

সেটি অনুমোদন পেয়ে অর্থ বরাদ্দ পেলেই আধুনিক মানের সড়কে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করবো। এছাড়া অধিক খারাপ স্থানে অস্থায়ী ভাবে মেরামত কাজ অব্যাহত রয়েছে।


বিকাশ চন্দ্র প্রাংনওগাঁ।

আপনি আরও পড়তে পারেন